Admission

চাকরি করা কাজ উত্তম, যখন তা হয় জাতির সেবা- যখন তাতে মর্যাদা ও ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয় না । যখন জীবন ধারণের সম্বল হয়ে পড়ে চাকরি-যখন সেটাকে দেশ-সেবা বলে মনে হয় না,তখন তা কোরো না । সত্য ও আইন অপেক্ষা উপরিস্থ কর্মচারীকে যদি বেশি মানতে হয়, তা হলে সরে পড়। প্রভুর সামনে যদি মনের বল না থাকে, কঠিনভাবে সত্য বলতে না পার, প্রয়োজন হলেই চাকরি ছেড়ে দেবার সঙ্গতি না থাকে— তাহলে বুঝব চাকরি করে তুমি পাপ করেছ।
মনের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে না পারলে তোমাতে ও পশুতে প্রভেদ থাকবে না— জীবন তোমার
মিথ্যা হবে। স্বাধীন হৃদয়, সত্যের সেবক কামার হও, সেও ভালো। নিজকে যন্ত্র করে ফেলো না ।
সৎ, জ্ঞানী ও মহৎ যিনি, তিনি নিজকে ব্যক্তিত্বহীন করতে ভয়ংকর লজ্জা বোধ করেন। তিনি তাতে পাপ বোধ করেন।
চাকরি করে অন্যায় পয়সায় ধনী হবার লোভ রাখ? তোমার চেয়ে মুদি ভালো। মুদির পয়সা পবিত্র। অনেক যুবক থাকতে পারে, যারা মনে করে কোনোরকম একটা চাকরি সংগ্রহ করে সমাজের ভেতরে আসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই হলো। চুরির সাহায্যেই হোক বা অসৎ উপায় অবলম্বন করেই হোক, ক্ষতি নেই ৷
চরিত্র তোমার নিষ্কলঙ্ক- সামান্য কাজ করে পয়সা উপায় কর, তাতে জাত যাবে না। চুরি অন্যায়ের সাহায্যে যে বাঁচতে চেষ্টা করে, তারই জাত যায়, অসৎ উপায়ে আয় কোরো না, মিথ্যার আশ্রয় নিও না। লোককে কায়দায় ফেলে অর্থ সংগ্রহ করতে তুমি ঘৃণা বোধ কোরো ।
ইউরোপের জ্ঞানগুরু প্লেটো মিসর ভ্রমণকালে মাথায় করে তেল বেচে রাস্তা-খরচ যোগাড় করতেন। যে কুঁড়ে, আলসে, ঘুষখোর ও চোর, সেই হীন। ব্যবসা বা ছোটো স্বাধীন কাজে মানুষ হীন হয় না- হীন হয় মিথ্যা চতুরতা ও প্রবঞ্চনায়। পাছে জাত যায়, সম্মান নষ্ট হয়— এই ভয়ে পরের গলগ্রহ হয়ে মাসের পর মাস কাটিয়ে দিচ্ছ ? সম্মান কোথায়, তা তুমি টের পাওনি?
সৎ উপায়ে যে পয়সা উপায় করা যায় তাতে তোমার আত্মার পতন হবে না। তোমার আত্মার পতন হবে আলস্যে ও অসাধুতায় । তোমারই স্পর্শে কাজ গৌরবময় হবে। আমাদের দেশের লোক যেমন আজকাল বিলেতে যায় এককালে তেমনি করে বিলেতের লোক গ্রিস ভ্রমণে যেত ।

বিলেত-ফেরত লোককে কেউ ইট টেনে বা কুলির কাজ করে পয়সা উপায় করতে দেখেছে?
বিলেতের এক পণ্ডিত দেশভ্রমণ দ্বারা অগাধ জ্ঞান অর্জন করেছিলেন— গ্রিকদেশ থেকে ফিরে এসে তিনি আরম্ভ করলেন এমন কাজ, যা তুমি আমি করতে লজ্জাবোধ করব। তাতে কি তাঁর জাত গিয়েছিল? যার মধ্যে জ্ঞান ও গুণ আছে, সে কয়দিন নিচে পড়ে থাকে? লোকে তাকে সম্মান করে উপরে টেনে তোলেই ।
কাজে মানুষের জাত যায় না- এটা বিশ্বাস করতে হবে। কাজহীন হও ঐ সময় যখন কাজের ভেতর অসাধুতা প্রবেশ করে, আর কোনো সময়েই নয় ।
বিশ্ব-সভ্যতার এত দান তুমি ভোগ কর এসব কী করে হলো? হাতের সাহায্যে নয় কি? কাজকামকে খেলো মনে করলে চলবে না। মিস্ত্রির হাতুড়ির আঘাত, কামারের কপালের ঘাম, কুলির কোদালকে শ্রদ্ধার চোখে দেখো ।
অনেকে বলে, তাদের জন্য কোনো কাজ নেই। যে কাজই তারা করুক, যে দিকেই তারা হাঁটুক- কেবল ব্যর্থতা আর ব্যর্থতা! মূর্খ যারা তারাই এ কথা বলে। তাদের এ ব্যর্থতার জন্য তারা নিজে দায়ী! এই নৈরাশ্যের হা-হুতাশ তাদেরই অমনোযোগ আর কুঁড়েমির ফল ।
ডাক্তার জনসন মাত্র কয় আনা পয়সা নিয়ে লন্ডনের মতো শহরে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন, অথচ তিনি কারও কাছে কোনো হাত পাতেননি। এক বন্ধু তাঁকে এক সময় এক জোড়া জুতো দিয়েছিলেন। অপমানবোধ করে তিনি সে জুতো পথে ফেলে দিয়েছিলেন। উদ্যম, পরিশ্রম ও চেষ্টার সামনে সব বাধাই পানি হয়ে যায়। এ গুণ যার মধ্যে আছে, যে ব্যক্তি পরিশ্রমী, তার দুঃখ নেই। জনসনকে অনেক সময় রাত্রিতে না খেয়ে শুয়ে থাকতে হতো, তাতে তিনি কোনোদিন ব্যথিত বা হতাশ হননি। বাধাকে চূর্ণ করে বীরপুরুষের মতো তিনি যে কীর্তি রেখে গিয়েছেন, তা অনেক দেশের অনেক পণ্ডিতই পারবেন না ।
গুণ থাকলেও চেষ্টা না করলে জগতে প্রতিষ্ঠা লাভ করা যায় না। আরভিং সাহেব বলেছেন, চুপ করে বসে থাকলে কাজ হবে না। চেষ্টা কর, নড়াচড়া কর, এমন কি কিছু-নাড়, ভেতর কিছু ফলাতে পারবে। কুকুরের মতো চিৎকার কর, সিংহ হয়েও ঘুমিয়ে থাকলে কী লাভ?
পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছ, তারপর মনে হচ্ছে তোমার মূল্য এক পয়সা নয়। জিজ্ঞাসা করি, কেন ? জান না, এ জগতে যারা নিতান্ত আনাড়ি তারা মাসে হাজার হাজার টাকা উপায় করছে?
তোমার এই মর্মবেদনা ও দুঃখের কারণ তুমি মূর্খ । মানুষ বালিতে সোনা ফলাতে পারে, এ তুমি
বিশ্বাস কর না? তুমি কুড়ে, তোমার উদ্যম নেই, তুমি একটা আত্মপ্রত্যয়হীন অভাগা ।
কাজ ছোটো হোক, বড়ো হোক, প্রাণ-মন দিয়ে করবে। মূল্যহীন বন্ধুগণের লজ্জায় কাজকে ঘৃণা কোরো না। সকল দিকে, সকল রকমে তোমার কাজ যাতে সুন্দর হয় তার চেষ্টা করবে।
ফক্স সাহেবকে এক সময় এক ভদ্রলোক বলেছিলেন, আপনার লেখা ভালো নয়। কাজের চারুতার প্রতি তাঁর এত নজর ছিল যে, তিনি সেই দিন থেকে স্কুলের বালকের ন্যায় লেখা আরম্ভ করলেন এবং অল্পকালের মধ্যে তাঁর লেখা চমৎকার হয়ে গেল ।

উন্নতির আর এক কারণ হচ্ছে দৃষ্টি ও মনোযোগ। এক ভদ্রলোকের খানিক জমি ছিল। জমিতে লাভ তো হতই না, বরং দিন দিন তাঁর ক্ষতি হচ্ছিল। নিরুপায় হয়ে নামমাত্র টাকা নিয়ে তিনি এক ব্যক্তিকে জমিগুলো ইজারা দিলেন। কয়েক বছর শেষে ইজারাদার এক দিন ভূস্বামীকে বললেন, যদি জমিগুলো বিক্রয় করেন তাহলে আমাকেই দেবেন। আপনার কৃপায় এই কয় বছরে আমি অনেক টাকা জমা করতে সক্ষম হয়েছি। ভূস্বামী অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, এ কয় বছরের ভেতর যে জমিতে আমি একটা পয়সা উপায় করতে পারিনি, সেই জমি মাত্র কয়েক বছর চাষ করেই খরিদ করতে সাহস করছ? সে বলল, আপনার মতো অমনোযোগী ও বাবু আমি নই। পরিশ্রম ছাড়া আমি আর কিছু জানি না । বেলা দশটা পর্যন্ত ঘুমানো আমার অভ্যাস নয় ।
এক যুবক স্কট সাহেবের কাছে উপদেশ চেয়েছিল। যুবককে তিনি এই উপদেশ দেন : কুঁড়েমি কোরো না, যা করবার, তা এখনই আরম্ভ কর । বিশ্রাম যদি করতে হয় কাজ সেরে করবে।
সময়ের যারা সদ্ববহার করে, তারা জিতবেই। সময়েই টাকা, সময় টাকার চেয়ে বেশি। জীবনকে উন্নত করো কাজ করে। জ্ঞান অর্জন কর। চরিত্রকে ঠিক করে বসে থাক। কৃপণের মতো সময়ের কাছ থেকে তোমার পাওনা বুঝে নাও ।
এক ঘণ্টা করে প্রতিদিন নষ্ট কর, বৎসর শেষে গুণে দেখ, অবহেলায় কত সময় নষ্ট হয়েছে। এক ঘণ্টা করে প্রতিদিন একটু করে কাজ কর, দেখবে বৎসর শেষে, এমনকি মাসে কত কাজ তোমার হয়েছে। তোমার কাজ দেখে তুমি নিজেই বিস্মিত হবে। প্রতিদিন তোমার চিন্তা একখানা কাগজে বেশি নয়-দশ লাইন করে ধরে রাখ, দেখবে বছর শেষে তুমি একখানা সুচিন্তিত চমৎকার বই লিখে ফেলেছ। জীবনকে ব্যবহার কর, দেখবে মৃত্যু জীবনের হাজার কীর্তির নিশান উড়িয়ে দিয়েছে। জীবন আলস্যে, বিনা কাজে কাটিয়ে দাও, মৃত্যুকালে মনে হবে জীবনে তোমার একটা মিথ্যা লীলার অভিনয় ছাড়া আর কিছু হয় নি— একটা সীমাহীন দুঃখ ও হা-হুতাশের সমষ্টি ! জীবন শেষে যদি বলো, ‘জীবনে কী করলাম? কিছু হলো না' তাতে কী লাভ হবে? কাজের প্রারম্ভে ভেবে নিও, তুমি কোন কাজের উপযোগী, জগতে কোন কাজ করবার জন্য তুমি তৈরি হয়েছ – কোন কাজে তোমার আত্মা তৃপ্তি লাভ করে।
সাধুতা ও সত্যের ভেতর দিয়ে যেমন উন্নতি লাভ করা যায়, এমন আর কিছুতে নয়। সত্য এবং সাধুতাকে লক্ষ্য রেখে ব্যবসা কর, তোমার উন্নতি অবশ্যম্ভাবী। জুয়াচুরি করে দু দিনের জন্য তুমি লাভবান হতে পার, সে লাভ দু দিনের। জগতে যে সমস্ত মানুষ ব্যবসাতে উন্নতি করেছেন তাঁদের কাজেকামে কখনও মিথ্যা, জুয়াচুরি ছিল না। ব্যবসা, ভালো কাজ-এর ভেতর অমর্যাদার কিছু নেই। অগৌরব হয় হীন পরাধীনতায়, মিথ্যা ও অসাধুতায়।
এক ব্যক্তি মুদি জীবনের লজ্জা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিল। মরবার আগে একখানা কাগজে লিখে রেখে গিয়েছিল— ‘এ হীন জীবন আমার পক্ষে অসহনীয়।' তার মৃত্যুতে আমাদের মনে কোনো দয়ার উদ্রেক হয় না। লোকটি এত হীন ছিল যে, তার মুদি হয়ে বাঁচবারও অধিকার ছিল না । কাজকাম বা ব্যবসাতে অগৌরব নেই। ঢাকার সুপ্রসিদ্ধ নবাব বংশের নাম পূর্ববঙ্গে প্ৰসিদ্ধ ।

এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলিমউল্লাহ্ ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। জাতির কল্যাণ হয় ব্যবসার ভেতর দিয়ে । ব্যবসাকে যে শ্রদ্ধার চোখে দেখে না সে মূর্খ। ইংরেজ জাতির এই গৌরব-গরিমার এক কারণ ব্যবসা । ব্যবসা না করলে তারা এত বড় হতে পারত না ।
যে জিনিস নিজে কিনলে ঠকেছ বলে মনে হয়, সে জিনিস ক্রেতাকে কখনও দিও না। কখনও অনভিজ্ঞ ক্রেতাকে ঠকিও না। হয়তো মনে হবে তোমার লোকসান হলো, কিন্তু না, অপেক্ষা কর, তোমার সাধুতা ও সুনাম ছড়াতে দাও, লোকসানের দশগুণ এসে তোমার পকেটে ভর্তি হবে ।
ব্যবসার ভেতর সাধুতা রক্ষা করে কাজ করায় অনেকখানি মনুষ্যত্বের দরকার। যে ব্যবসায়ী লোভ সংবরণ করে নিজের সুনামকে বাঁচিয়ে রাখে, সে কম মহত্ত্বের পরিচয় দেয় না। মিষ্ট ও সহিষ্ণু ব্যবহার, ভদ্রতা এবং অল্প লাভের ইচ্ছা তোমার ব্যবসায়ী জীবনকে সফল করবে।
অনবরত চাকরির লোভে যুবকেরা সোনার শক্তিভরা জীবনকে বিড়ম্বিত করে দিচ্ছে। মিস্ত্রি, কামার, শিল্পী, দরজি এরা কি সত্যই নিম্নস্তরের লোক? অশিক্ষিত বলেই কি সভ্য সমাজে এদের স্থান নেই? যা তুমি সামান্য বলে অবহেলা করছ, তা কতখানি জ্ঞান, চিন্তা ও সাধনার ফল তা কি ভেবে দেখেছ? শিক্ষিত ব্যক্তি যে কোনো কাজই করুক না, তার সম্মান, অর্থ দুই-ই লাভ হবে। আত্মার অফুরন্ত শক্তিকে মানুষের কৃপাপ্রার্থী হয়ে ব্যর্থ করে দিয়ো না।

Content added By

মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ১৮৮৯ সালে মাগুরা জেলার পারনান্দুয়ালী গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস যশোর জেলার হাজীগ্রামে। লুৎফর রহমান এফ.এ. পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। তিনি প্রথমে শিক্ষক এবং পরে হোমিওপ্যাথ ডাক্তার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি ডাক্তার লুৎফর রহমান নামে পরিচিত ছিলেন। নারী সমাজের উন্নতির জন্য নারীতীর্থ নামে সেবা প্রতিষ্ঠান গঠন এবং নারীশক্তি নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি চিন্তাশীল ও যুক্তিবাদী প্রাবন্ধিক হিসেবে খ্যাত হয়েছিলেন। তাঁর প্রবন্ধ সহজবোধ্য কিন্তু ভাবগম্ভীর। তিনি মহৎ জীবনের লক্ষ্যে সাহিত্যের মাধ্যমে মহৎ চিন্তা চেতনায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন । গভীর জীবনবোধ, মানবিক মূল্যবোধ এবং আত্মসম্মান ও মর্যাদার প্রতি সূক্ষ্ম বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর রচনার প্রসাদগুণ। উন্নত জীবন, মহৎ জীবন, উচ্চ জীবন, সত্য জীবন, মানব জীবন, প্রীতি উপহার প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। প্রবন্ধ ছাড়াও তিনি কবিতা, উপন্যাস ও ছোটদের বই রচনা করেছেন। ১৯৩৬ সালে তিনি পরলোকগমন করেন।

Content added By

ব্যক্তিত্ব— ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য। নিষ্কলঙ্ক- নির্মল। প্লেটো (খ্রি.পূ. ৪২৭-৩৪৭)- শিক্ষাব্রতী ও সত্যানুসন্ধানী প্লেটো ৩৮৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে একাডেমি নামে এথেন্সে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং শিক্ষামূলক গবেষণায় ব্রতী হন। রিপাবলিক তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ। প্লেটোর মতে, ব্যক্তিত্বের মান বা জীবনের সার্থকতা কী? তাঁর কথায় Only an examined life is worthliving অর্থাৎ পরীক্ষিত জীবনই সার্থক জীবন-আত্মজ্ঞানের দ্বারা পরিশীলিত জীবনবোধই ব্যক্তিসত্তার ধারক ও বাহক। অসাধুতা— প্রতারণা, অসৎকাজ। খেলো— মূল্যহীন, নিকৃষ্ট।
ড. জনসন- (Dr. Samuel Johnson : ১৭০৯-১৭৮৪)-একজন বিশিষ্ট ইংরেজ লেখক ও ইংরেজি ভাষার প্রথম অভিধান সংকলক। তিনি বহু প্রখ্যাত অভিধান প্রণেতা। Dictionary, Vanity of Human Wishes, Rasselas, Prince of Abyssinia, Lives of the Poets ইত্যাদি গ্রন্থের জন্য তিনি স্মরণীয়।
আরভিং- (Washington Irving : ১৮৮৩-১৯৫৯)-একজন আমেরিকান লেখক। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় গ্রন্থের নাম ‘রিপ ভ্যান উইংকল ।’
স্কট- (Sir Walter Scott : ১৭৭১-১৮৩২)- ইংরেজি ভাষায় প্রখ্যাত স্কটিশ ঔপন্যাসিক ও গাথা রচয়িতা। তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস 'আইভানহো' ।
 হা-হুতাশ-আক্ষেপধ্বনি । উদ্রেক-উদয়, সঞ্চার । গৌরব-গরিমা, মর্যাদা, গর্ব। বিড়ম্বিত-দুঃখপ্রাপ্ত। ব্যর্থ-নিষ্ফল ।

Content added By

‘উদ্যম ও পরিশ্রম' নিবন্ধটি মোহাম্মদ লুৎফর রহমানের উন্নত জীবন গ্রন্থের দশম পরিচ্ছেদ থেকে সংগৃহীত । গ্রন্থের মূল নিবন্ধে এর নাম ‘চাকরি, কাজকর্ম ও ব্যবসা : উদ্যম, চেষ্টা, পরিশ্রম।' উদ্যম ও পরিশ্রম নিবন্ধে লুৎফর রহমান স্পষ্টরূপে উচ্চারণ করেছেন যে, জীবন ধারণের জন্য কাজ করতে হবে। তবে কোনো কাজই যেন মনের স্বাধীনতাকে খর্ব না করে। চাকরি জীবনে স্বার্থবুদ্ধি বা অন্যায়ের কোনো স্পর্শ যেন না থাকে। কাজ ছোট হোক ক্ষতি নেই, কিন্তু তা করতে গিয়ে যেন ব্যক্তি তার সত্তার অমর্যাদা না ঘটায়। পৃথিবীতে এমনও দৃষ্টান্ত আছে, যাঁরা এককালে ছোটখাটো কাজ করেছেন, আত্মসম্মান বজায় রেখে নিজ লক্ষ্য স্থির রেখে অবশেষে হয়েছেন পৃথিবীখ্যাত লোক । আত্মোন্নতির জন্য পরিশ্রম এবং উদ্যম অপরিহার্য, এর সঙ্গে উন্নত দৃষ্টি ও একাগ্র মনোযোগ থাকতে হবে। সত্তার মহিমা উদ্ভাসিত হয় কাজের মাধ্যমে, তেমনি সমাজেও স্বনির্ভর যুবকের, শিক্ষিত মানুষের অফুরন্ত শক্তির প্রকাশও আমরা দেখতে পাই। প্রবন্ধটির মূল শিক্ষা এই যে, উদ্যম ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে বিকশিত করা যায়; অন্যের অনুগ্রহ নয়, বরং নিজের পরিশ্রম ও কাজের সূত্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়াই জীবনের প্রকৃত সফলতা।

Content added By